Archive for September 1st, 2015

পরীক্ষামূলক ভাবে জাপান বিদেশি গৃহকর্মীর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে

জাপানের গৃহস্থালি সেবা বিদেশি কর্মীদের জন্যে পরীক্ষামূলক ভাবে উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে। দু’টি অঞ্চলে এক বছরের মধ্যেই প্রাথমিক ভাবে এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্য সকল স্থানেও এই আইন প্রযোজ্য হবে। জাপানে এই খাতে কর্মী সংকট রয়েছে। কর্মপরিবেশের যথাযথ শর্তপূরণ সাপেক্ষে আপাততঃ গৃহকর্মীর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠছে ওসাকা এবং কানাগাওয়া প্রিফেকচারে। জাপানের জাতীয় কৌশলগত অর্থনৈতিক অঞ্চলের উপর একটি বিশেষ কমিটি সেপ্টেম্বরে এর পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা চুড়ান্ত করবে। নতুন আইন অনুসারে গৃহস্থলির কাজের জন্যে বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তা অবশ্যই পূর্ণকালীন ভিত্তিতে এবং বেতন জাপানি কর্মীদের সমান বা বেশি হতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ৩ বছর মেয়াদে বিদেশি গৃহকর্মী আনতে পারবে। সার্বক্ষণিক ভাবে গৃহকর্মীকে রাখা যাবে না এবং নিয়োগকর্তা কর্মীর আবাসন নিশ্চিত করবেন। ওসাকা এবং কানাগাওয়া কোম্পানি গুলোকে নতুন নীতিমালা মেনে চলতে অনুরোধ করবে। দাসুকিন হলো জাপানের অন্যতম বৃহৎ গৃহকর্মী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তারা এই সুযোগের পূর্ণাঙ্গ সদ্ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে। ইতিমধ্যেই তারা বিদেশি ছাত্র এবং অন্যান্য স্বল্প-মেয়াদী অভিবাসীদের খন্ডকালীন ভিত্তিতে “পরিষ্কার কর্মী”র মতো বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়ে আসছে। বিদেশি পূর্ণকালীন কর্মীদেরকে দিয়ে শিশুর যত্ন ও বাজার করার মতো বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করা সম্ভব। এর সাথে থাকছে সাধারণ গৃহস্থলির কাজকর্ম। দাসুকিন দাবি করেছে যে তারা বিদেশি ও জাপানি কর্মীদের সমান কাতারে রাখা হবে এবং মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। টোকিও ভিত্তিক গৃহকর্মী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিয়ার ফিলিপাইন সহ অন্যান্য দেশ থেকে গৃহকর্মী সংগ্রহের উদ্যোগ নেবে কারণ তারা ওসাকা ও কানাগাওয়া’তে তাদের কর্মপরিসর বৃদ্ধি করছে। বিয়ার ফিলিপাইনে নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের জন্যে এক বছরের মধ্যে একটি সাবসিডিয়ারি খুলবে। তাদের উদ্দেশ্য শ্রম বাজারে বড় রকমের দখল নেয়া। প্যাসোনা লাইফকেয়ার ফিলিপাইন থেকে ৫০ জন বিদেশি কর্মীকে নিয়োগ দেবে। বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ প্রদান জাপানের কর্মী সংকটকে কিছুটা দূরীভূত করবে। সরকারের এক পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে গৃহকর্মী পরিসেবা ৬০ হাজার কোটি ইয়েন বা ৫০০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে যা ২০১২ সালের তুলনায় ৬ গুন। বর্তমানে বহু গৃহকর্মী প্রবীণ হয়ে পড়েছেন এবং কেবলমাত্র খন্ডকালীন ভিত্তিতে কাজ করে থাকেন, ফলে গৃহকর্মীর জন্যে নতুন উৎসের প্রয়োজন পড়ছে। এতো দিন পর্যন্ত গৃহকর্মীর জন্যে জাপানের নাগরিক হওয়া কিম্বা বিদেশিদের যথাযথ যোগ্যতা থাকা বাধ্যতামূলক ছিলো যা বিদেশি কর্মীদেরকে কঠোর ভাবে গৃহস্থলীর আওতার বাইরে রাখছিলো। যদি এই ব্যবস্থা সফল হয় তবে রাজধানী টোকিও সহ অন্যান্য স্থানেও গৃহকর্মীদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। নীতিটি শেষ পর্যন্ত দেশের সকল স্থানের জন্যে প্রযোজ্য হবে।

নিরাপত্তা বিলের প্রতিবাদে জাপান জুড়ে বিক্ষোভ

গত রোববার জাপানের ২০০টিরও বেশি স্থানে ছাত্র সহ সাধারণ প্রতিবাদকারীরা বিতর্কিত নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র গৃহীত এই পদক্ষেপ বহির্বিশ্বে জাপানের সামরিক ভূমিকাকে জোরালো করে তুলবে। সবচেয়ে বড় সমাবেশের একটি টোকিও’র ডায়েট ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার বিক্ষোভকারী এতে অংশ নেন বলে আয়োজকরা জানান। বিরোধী দল গুলোর কোনো কোনো নেতাও এতে অংশ নেন, যেমন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ জাপান’র কাৎসুইয়া ওকাদা এবং জাপান কমিউনিস্ট পার্টির কাজুও শিই। আবে সরকারকে বিলটি বাতিল করার আহ্বান জানাবেন বলে বিরোধী নেতারা সমাবেশে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। ডিপিজে প্রধান ওকাদা “আবে প্রশাসনকে সাধারণ নাগরিকদের সংকটের অনুভূতি এবং তাদের রাগান্বিত হওয়ার কারণ বুঝতে হবে”।