Archive for September, 2015

হজ্ব বিষয়ক ভুল-ভ্রান্তি: মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া

হজ্বই একমাত্র ইবাদত, যার নিয়ত করার সময়ই আল্লাহ তাআলার নিকট সহজতা ও কবুলের দুআ করা হয়। অন্যান্য ইবাদত থেকে হজ্বের আমলটি যে কঠিন তা এ থেকেই স্পষ্ট। হজ্বের সঠিক মাসআলার জ্ঞান যেমন জরুরি, তেমনি তা আদায়ের কৌশল এবং পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে করণীয় বিষয়গুলোর প্রতি পূর্ণ খেয়াল রাখাও জরুরি। হজ্বে যে সকল ভুল হতে দেখা যায় তা সাধারণত উদাসীনতার কারণেই হয়ে থাকে। তাই নিম্নে সচরাচর ঘটে থাকে এমন কিছু ভুল উল্লেখ করা হচ্ছে। যেন হাজ্বীগণ এ সকল ভুল-ভ্রান্তি- থেকে বেঁচে সুষ্ঠুরূপে হজ্ব আদায়ে সক্ষম হন। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন। ইহরামের দুই রাকাত নামাযের জন্য ইহরাম বিলম্বিত করা ইহরাম বাঁধার আগে দুই রাকাত নামায পড়ার নিয়ম আছে। তাই অনেককে দেখা যায়, এই দুই রাকাত নামাযের সুযোগ না পাওয়ার কারণে ইহরাম বিলম্বিত করতে থাকে। এমনকি এ নামায পড়তে না পারার কারণে কেউ কেউ ইহরাম ছাড়াই মীকাতে র ভেতরে পর্যন- চলে যায় অথচ ইহরাম ছাড়া মীকাত অতিক্রম করা জায়েয নয়। তারা যেহেতু ইহরামের আগে দুই রাকাত নামায আদায়কে জরুরি মনে করে তাই তারা এমনটি করে থাকে। অথচ ইহরামের আগে নামায পড়া সকল মাযহাবেই মুস্তাহাব; জরুরি কিছু নয়। পক্ষান-রে ইহরাম ছাড়া মীকাত অতিক্রম করা নাজায়েয। সুতরাং ইহরামের আগে নামাযের সুযোগ পেলে তো তা আদায় করা চাই, কিন্তু সুযোগ না পেলে সে কারণে ইহরাম বাঁধাকে বিলম্ব করবে না।-সহীহ মুসলিম ১/৩৭৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা হাদীস : ১২৯০০; মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃ. ৯৮; আলমুগনী ইবনে কুদামা ৫/৮১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২২৩; রদ্দুল মুহতার ২/৪৮১-৪৮২ ইহরাম বাঁধার নিয়ম সংক্রান্ত- ভ্রান্তি-সমূহ অনেকে মনে করে থাকে যে, ইহরামের কাপড় পরে নামায পড়ার পর নিয়ত করলেই ইহরাম সম্পন্ন হয়ে যায়। এ ধারণা ভুল। এগুলো দ্বারা ইহরাম সম্পন্ন হয় না। নিয়ত আরবীতে করা হোক বা বাংলাতে, সশব্দে করা হোক বা মনে মনে এর দ্বারা ইহরাম সম্পন্ন হয় না; বরং নিয়তের পর তালবিয়া পড়লে ইহরাম পূর্ণ হয়। অতএব বোঝা গেল, ইহরাম সম্পন্ন হয় দুই বস’র সমন্বয়ে : ১. হজ্ব বা উমরার নিয়ত করা ও ২. তালবিয়া পড়া।-জামে তিরমিযী ১/১০২; গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ৬৫; মানাকি মোল্লা আলী কারী পৃ. ৮৯ মক্কাগামীদের জন্য জিদ্দায় ইহরাম বাঁধা কেউ কেউ আগে থেকেই ইহরাম বাঁধা ঝামেলা মনে করে এবং ভাবে যে, ইহরাম বেঁধে নিলেই তো ইহরামের নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়ে যাবে। বিমান যেহেতু জিদ্দায় অবতরণ করবে তাই জিদ্দায় ইহরাম বাঁধার ইচ্ছায় ইহরামকে বিলম্বিত করে। অথচ মীকাতের বাইরের হাজ্বীদের জন্য ইহরাম ব্যতীত মীকাত অতিক্রম করা জায়েয নেই। উপমহাদেশ থেকে গমনকারী হাজ্বীদের জন্য মীকাত হল কারনুল-মানাযিল ও যাতু ইরক যা অতিক্রম করেই জেদ্দায় যেতে হয়। যদি কেউ বিনা ইহরামে মীকাত অতিক্রম করে তবে তার জন্য পুনরায় মীকাতে ফিরে এসে ইহরাম […]

শক্তি প্রদর্শনে বিশ্বকে চমকে দিল চীন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসান হয়েছিল ১৯৪৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখে জাপানে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে। সেই ঐতিহাসিক ক্ষণের ৭০ বছর পূর্তির দিনে সামরিক শোভাযাত্রায় নিজের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে চীন।  চীনের বিখ্যাত তিয়ান আনমেন স্কোয়ারে ঐতিহাসিক এই সামরিক শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিলো ১২ হাজার সৈন্য ও ২০০ টি বিমান। এই শোভাযাত্রায় অসংখ্য ট্যাংক ও মিসাইল প্রদর্শন করা হয়। বিশেষ করে বড় সামরিক জাহাজ ধ্বংসকারী ডংফেং ২১-ডি বিশেষ ভাবে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। উল্লেখ্য, শোভাযাত্রায় প্রদর্শিত ৮০ শতাংশ অস্ত্র প্রথম বারের মতো জনসম্মুখে দেখানো হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই শোভাযাত্রা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়াকু চীনের মানুষদেরকে উৎসর্গ করেছেন। সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শনের দিনে তিনি জানিয়েছেন চীনা সেনাবাহিনী আর নিজের ক্ষমতা বাড়াবে না বরং ৩ লাখ সেনা কমাবে। চীনের এই ঐতিহাসিক প্যারেডে ত্রিশটি দেশের প্রতিনিধিরা ছিলেন।  রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও জাতিসংঘের সভাপতি বান কি মুন ও উপস্থিত ছিলেন । তবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সহ অনেক পশ্চিমা দেশের প্রধান আমন্ত্রণ রক্ষা করেননি। এদিকে চীনের শোভাযাত্রার দিনের কিছু আগে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে আলাস্কার বেরিং সাগরে প্রথমবারের মতো পাঁচটি যুদ্ধ জাহাজ দেখা গেছে।

পরীক্ষামূলক ভাবে জাপান বিদেশি গৃহকর্মীর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে

জাপানের গৃহস্থালি সেবা বিদেশি কর্মীদের জন্যে পরীক্ষামূলক ভাবে উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে। দু’টি অঞ্চলে এক বছরের মধ্যেই প্রাথমিক ভাবে এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্য সকল স্থানেও এই আইন প্রযোজ্য হবে। জাপানে এই খাতে কর্মী সংকট রয়েছে। কর্মপরিবেশের যথাযথ শর্তপূরণ সাপেক্ষে আপাততঃ গৃহকর্মীর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠছে ওসাকা এবং কানাগাওয়া প্রিফেকচারে। জাপানের জাতীয় কৌশলগত অর্থনৈতিক অঞ্চলের উপর একটি বিশেষ কমিটি সেপ্টেম্বরে এর পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা চুড়ান্ত করবে। নতুন আইন অনুসারে গৃহস্থলির কাজের জন্যে বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তা অবশ্যই পূর্ণকালীন ভিত্তিতে এবং বেতন জাপানি কর্মীদের সমান বা বেশি হতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ৩ বছর মেয়াদে বিদেশি গৃহকর্মী আনতে পারবে। সার্বক্ষণিক ভাবে গৃহকর্মীকে রাখা যাবে না এবং নিয়োগকর্তা কর্মীর আবাসন নিশ্চিত করবেন। ওসাকা এবং কানাগাওয়া কোম্পানি গুলোকে নতুন নীতিমালা মেনে চলতে অনুরোধ করবে। দাসুকিন হলো জাপানের অন্যতম বৃহৎ গৃহকর্মী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তারা এই সুযোগের পূর্ণাঙ্গ সদ্ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে। ইতিমধ্যেই তারা বিদেশি ছাত্র এবং অন্যান্য স্বল্প-মেয়াদী অভিবাসীদের খন্ডকালীন ভিত্তিতে “পরিষ্কার কর্মী”র মতো বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়ে আসছে। বিদেশি পূর্ণকালীন কর্মীদেরকে দিয়ে শিশুর যত্ন ও বাজার করার মতো বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করা সম্ভব। এর সাথে থাকছে সাধারণ গৃহস্থলির কাজকর্ম। দাসুকিন দাবি করেছে যে তারা বিদেশি ও জাপানি কর্মীদের সমান কাতারে রাখা হবে এবং মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। টোকিও ভিত্তিক গৃহকর্মী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিয়ার ফিলিপাইন সহ অন্যান্য দেশ থেকে গৃহকর্মী সংগ্রহের উদ্যোগ নেবে কারণ তারা ওসাকা ও কানাগাওয়া’তে তাদের কর্মপরিসর বৃদ্ধি করছে। বিয়ার ফিলিপাইনে নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের জন্যে এক বছরের মধ্যে একটি সাবসিডিয়ারি খুলবে। তাদের উদ্দেশ্য শ্রম বাজারে বড় রকমের দখল নেয়া। প্যাসোনা লাইফকেয়ার ফিলিপাইন থেকে ৫০ জন বিদেশি কর্মীকে নিয়োগ দেবে। বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ প্রদান জাপানের কর্মী সংকটকে কিছুটা দূরীভূত করবে। সরকারের এক পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে গৃহকর্মী পরিসেবা ৬০ হাজার কোটি ইয়েন বা ৫০০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে যা ২০১২ সালের তুলনায় ৬ গুন। বর্তমানে বহু গৃহকর্মী প্রবীণ হয়ে পড়েছেন এবং কেবলমাত্র খন্ডকালীন ভিত্তিতে কাজ করে থাকেন, ফলে গৃহকর্মীর জন্যে নতুন উৎসের প্রয়োজন পড়ছে। এতো দিন পর্যন্ত গৃহকর্মীর জন্যে জাপানের নাগরিক হওয়া কিম্বা বিদেশিদের যথাযথ যোগ্যতা থাকা বাধ্যতামূলক ছিলো যা বিদেশি কর্মীদেরকে কঠোর ভাবে গৃহস্থলীর আওতার বাইরে রাখছিলো। যদি এই ব্যবস্থা সফল হয় তবে রাজধানী টোকিও সহ অন্যান্য স্থানেও গৃহকর্মীদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। নীতিটি শেষ পর্যন্ত দেশের সকল স্থানের জন্যে প্রযোজ্য হবে।

নিরাপত্তা বিলের প্রতিবাদে জাপান জুড়ে বিক্ষোভ

গত রোববার জাপানের ২০০টিরও বেশি স্থানে ছাত্র সহ সাধারণ প্রতিবাদকারীরা বিতর্কিত নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র গৃহীত এই পদক্ষেপ বহির্বিশ্বে জাপানের সামরিক ভূমিকাকে জোরালো করে তুলবে। সবচেয়ে বড় সমাবেশের একটি টোকিও’র ডায়েট ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার বিক্ষোভকারী এতে অংশ নেন বলে আয়োজকরা জানান। বিরোধী দল গুলোর কোনো কোনো নেতাও এতে অংশ নেন, যেমন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ জাপান’র কাৎসুইয়া ওকাদা এবং জাপান কমিউনিস্ট পার্টির কাজুও শিই। আবে সরকারকে বিলটি বাতিল করার আহ্বান জানাবেন বলে বিরোধী নেতারা সমাবেশে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। ডিপিজে প্রধান ওকাদা “আবে প্রশাসনকে সাধারণ নাগরিকদের সংকটের অনুভূতি এবং তাদের রাগান্বিত হওয়ার কারণ বুঝতে হবে”।